প্রার্থীর এজেন্ট আছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আছেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তারাও প্রস্তুত। সংকট শুধু ভোটারের। দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে দেশের অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রের চিত্র প্রায় এমনই।
দেড় দশকের মধ্যে এবারের উপজেলা নির্বাচনে ভোটের হার সর্বনিম্ন। মঙ্গলবার সম্পন্ন হওয়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ভোট পড়েছে ৩০ শতাংশের কিছু বেশি। যা প্রথম ধাপের চেয়েও কম। নির্বাচন বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ভোটাররা। যা গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগের। তারা এর দায় দিচ্ছেন নির্বাচন কমিশনকে।
বিএনপির নির্বাচন বর্জনের মুখে ভোটার টানতে দলীয় প্রতীক না দিয়ে প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই কৌশলও কেন্দ্রে ভোটার টানতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের। নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের ওপর অনাস্থাকেই মূল কারণ বলছেন তাঁরা।
ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের প্রেসিডেন্ট মুনিরা খান বলেন, ‘আমাদের যে নির্বাচনগুলো হচ্ছে তা একই পরিপ্রেক্ষিতে হচ্ছে কিন্তু। আমি নির্বাচন কমিশনের এমন কোন কার্যক্রম দেখিনি যা দেখে আমার মনে হবে এবারের ভোট ভিন্ন হবে, আমি ভোট দেই। ভালো ইলেকশন করবার অনীহা আছে নির্বাচন কমিশনের। তাহলে আমাদের দেশে ভালো ইলেকশন কীভাবে হবে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপিসহ মূলধারার একাধিক দল নির্বাচনের বাইরে থাকায় ভোটার উপস্থিতি কম। এছাড়া ভোটের আগেই ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের বিজয়ী মনোভাবও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী।
জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী যারা তাদের সবার একটা ঐকমত্য আছে, তারা সবাই এই নির্বাচন নিয়ে বেনিফিটেড। এক ভোট বেশি পেয়েও যদিও জয়লাভ করা যায় তাহলে এই ঝামেলায় যাবেন কেন। এখন দুর্দিন সেকারণে ক্ষমতায় নেই, আবার ভবিষ্যতে সুদিন আবার আসতেও পারে।’
নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ধারাবাহিকভাবে কমে যাওয়াকে নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য অশনিসংকেতও বলছেন বিশ্লেষকরা।